শিক্ষা

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কি?  আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ? 

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বর্তমান বিশ্বের  সব থেকে বেশি আলোচিত বিষয়।

আসলে কি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স? এটি আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ? সত্যিই কি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আমাদের জব কেড়ে নিতে চলেছে? সবকিছু এই ভিডিওতে বিস্তারিত জানব। চলুন শুরু করা যাক !

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স
আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো এক ধরনের সফটওয়্যার টেকনোলজি, যা প্রোগ্রামিং -এর দ্বারা মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং চিন্তাশক্তিকে অনুকরণ করানোর চেষ্টা করা হয়।

যেমন, কারো কথা বুঝতে পারা, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, নির্দেশ মতো কাজ করে দেওয়া, সিদ্ধান্ত নেওয়া, দেখে চিনতে পারা, সমস্যা সমাধান করতে পারা ইত্যাদি ইত্যাদি। Google Assistant, Alexa, Siri এগুলো সবই এক একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।

আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স পথচলা শুরু ১৯৫০-৬০ দশকে। ১৯৫৫ সালে মার্কিন কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট জন ম্যাকার্থি (Jone MaCarthy) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন। এমনকী, এই প্রযুক্তির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনিই। এই জন্য তাঁকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স -এর জনক বলা হয়। 

বর্তমানে Chat GPT আসার পর থেকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স  সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

● আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বহু কাজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে খুব সহজেই এবং নির্ভুলভাবে সম্পূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে। আমাদের জন্য ফটো এডিট করা, নতুন ফটো ক্রিয়েট করা, ভিডিও এডিট করা, কনটেন্ট লেখা, পড়াশোনায় সাহায্য করা, স্বাস্থ্য টিপস দেওয়া, ইমেইলের অটোমেটিক রিপ্লাই দেওয়া, মিউজিক তৈরি করা প্রভৃতি বহু বহু কাজে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অলরেডি আমাদেরকে সাহায্য করে চলেছে। 

● এখন পৃথিবীতে এক নতুন বিপ্লব দেখা দিতে চলছে। এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সবকিছুর উপর প্রভাব ফেলতে চলেছে। 

চাকরির বাজার, পড়াশোনার পদ্ধতির, কৃষি পদ্ধতি, চিকিৎসা পদ্ধতি, যুদ্ধ পদ্ধতি প্রভূতি পরিবর্তন হতে চলেছে। 

● তবে এ কথা সত্যি যে, AI এর ভয়ংকর এবং সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে চাকরি ক্ষেত্রে। কেউ কোনদিন ভাবতে পারেনি গ্রাফিক্স ডিজাইনার, লোগো ডিজাইনার, ফটো এডিটর, ভিডিও এডিটর, কনটেন রাইটার  এমনকি মিউজিসিয়ানসহ আরো বহু সেক্টরের কাজ বিলুপ্তি হতে পারে। কেননা এই কাজগুলো মাত্র কয়েক সেকেন্ডে AI এর মাধ্যমে খুব সহজেই নির্ভুলভাবে করা সম্ভব। সুতরাং, যে সমস্ত সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে সেখানে কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। এটাই স্বাভাবিক। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমি ফোরাম এর মতে, AI -এর কারনে ২০২৫ সাল পর্যন্ত 85 মিলিয়ন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়বে। শুনে ভয় পাচ্ছেন? ভয় পাওয়ার কিছু নেই। অন্যদিকে, এই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে যে, AI এর সাহায্যে 97 মিলিয়ন নতুন জব তৈরি হবে। সুতরাং, পুরাতন জব চলে গেলেও নতুন জবের সম্ভাবনাও বাড়বে।  এখন প্রশ্ন হল, নতুন যে কর্মক্ষেত্র তৈরি হবে সেটি কোন ধরনের? এ ক্ষেত্রে বলা যায়, গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মত কাজ যদি বিলুপ্তি হয়, তাহলে AI দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন করার জন্য এবং AI কে সঠিক নির্দেশ দেয়ার জন্য অবশেষে কোন মানুষকে তো লাগবেই। তাই বলা যায়, AI আপনার জব কেড়ে নেবে না, তবে AI ব্যবহার করতে জানে এমন ব্যাক্তি অবশ্যই আপনার জব কেড়ে নেবে। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব আমাদেরকে এই নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে জানতে হবে। যারা জানবে না তারা স্বাভাবিকভাবেই অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়বে।

● এখন আমাদের মনে একটাই প্রশ্ন AI কি আদৌ আমাদের জন্য আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ নিয়ে আসবে? 

কেননা ইতিপূর্বে কয়েকটি ঘটনা সমস্ত মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। আমরা দেখেছি, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে কিছু কুবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ AI কে ব্যবহার করে কিভাবে মেয়েদের সম্মানহানি করছে। শুধু তাই নয়, AI এর মাধ্যমে ভয়েস নকল করে আমাদের পরিবার-পরিজনকেও ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে। আসলে AI একটি উন্নতমানের টেকনোলজি। তাই AI এই সমস্ত কাজগুলি এত নির্ভুলভাবে করছে যে, একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে কোনটি আসল, কোনটি নকল তা বোঝা প্রায় অসম্ভব। এক কথায়, AI  কে ভুল ভাবে ব্যবহার করলে, হাজার হাজার প্রাণহানি ঘটতে পারে। এমনকি, সমগ্র মানবজাতির জন্য এক অভিশাপ নিয়ে আসতে পারে। আর এই অভিশাপের জন্য AI দায়ী নয়, দায়ী মানুষ । কতগুলো স্বার্থান্বেষী নরপিশাচ মানুষই AI কে মানুষের অকল্যাণে নিয়ে যাচ্ছে।

AI অবশ্যই মানব সভ্যতার জন্য কল্যাণময়ী। AI যদি মানুষের শুভবুদ্ধির দ্বারা পরিচালিত হয়, তাহলে AI কেবলমাত্র মানবকল্যাণ রূপে মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। AI এর অগ্রগতিকে সঠিক পথে পরিচালনা করলেই মানব সভ্যতার অগ্রগতি নিশ্চিত হবে। AI এর সঠিক ব্যবহার বিশ্ব মানবজাতিকে এক নতুন পথের দিশা দেখাবে। সুতরাং AI মানবজাতির জন্য কখনো অভিশাপ নয়, সর্বদা আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। 

Read More…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *